বিজ্ঞাপন

২০৩০ সালের আগেই ম্যালেরিয়া নির্মূল হবে— আশাবাদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

August 10, 2022 | 11:16 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সফলতা এসেছে। এরইমধ্যে দেশ পোলিও, টিটেনাস, কালা জ্বরমুক্ত হয়েছে। তবে ম্যালেরিয়া এখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একক চেষ্টায় সম্ভবও নয়। তবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই দেশ থেকে ম্যালেরিয়াসহ সংক্রামক রোগগুলো নির্মূল করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘২০১৪ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ছিল প্রায় ৫৭ হাজার। সেই সংখ্যা এখন কমে নেমেছে ৬/৭ হাজারে। আগের তুলনায় যা ছিল তা এখন ১০ শতাংশে নেমেছে, অর্থাৎ ৯০ শতাংশ কমেছে। এটা আমাদের বড় অর্জন।’

তিনি বলেন, ‘৬৪ জেলার মধ্যে এখন ৫১টি জেলা ম্যালেরিয়ামুক্ত। ম্যালেরিয়ায় অনেক লোক মারা যেতেন। গত তিন বছরে তিনজন ম্যালেরিয়া রোগী মারা গেছে। প্রতিবছর একজন ম্যালেরিয়া রোগী মারা গেছেন। কিন্তু গত দুই বছর ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এই তিন জেলায় ম্যালেরিয়ার বিস্তার রয়েছে। সেখানেই মৃত্যু ঘটেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘২০২০ সালের তুলনায় গত বছর দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়েছে। মৃত্যুর কারণ হলো আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে চিকিৎসা নিয়েছেন। করোনায় লকডাউন ছিল, তাই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম মানুষ হাসপাতালে আসতে পারবে না, যে কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাবে। তাই হয়ছে। আমরা চাই না ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধি পাক। তাই সবাই মিলেই কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র দেশে ব্যবস্থা নিলে হবে না, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে সেসব দেশেও যাতে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ বন্ধ হয়ে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের দেশে মশা নির্মূল হলেও বর্ডার দিয়ে মশা তো আর আটকে থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ম্যালেরিয়া মুক্ত করা। ২০১৪ সালে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ছিল ৫৭ হাজারের বেশি। বর্তমানে ৬ থেকে ৭ হাজারের বেশি সংক্রমণ হয় না। আমার মতে সঠিকভাবে কাজ করলে ২০৩০ এর আগেই আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে সব এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি, সেগুলোতে ফোকাস করতে হবে। যারা টি গার্ডেনে কাজ করে, আর্মিতে যারা কাজ করেন, তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। কীভাবে তারা ম্যালেরিয়া মুক্ত থাকতে পারবেন, সেগুলো তাদের বুঝাতে হবে। তবে সচেতনতা হলো বড় বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে যেসব এলাকার, সেখানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এ সব অঞ্চলের চা-বাগানে, কনস্ট্রাকশনে, আর্মি, পুলিশ সদস্যরা যারা কাজ করেন, তাদেরকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত, তারা কীভাবে নিজেকে ম্যালেরিয়া থেকে সুরক্ষিত রাখবেন সেই বিষয়ে। হ্যাঁ সময় মতো চিকিৎসারও প্রয়োজন আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে আমাদের বাজেট বেড়েছে। এ বছর ৩৭ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। ডাক্তার-নার্স অনেক বেড়েছে। গত তিন বছরে ১৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের জনবল-অবকাঠামো পর্যাপ্ত হয়েছে। এখন আমাদের কোয়ালিটি বাড়াতে হবে। আমরা মনিটরিংয়ে জোর দিচ্ছি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আরও জনবল প্রয়োজন আছে কারণ আমাদের এখনও জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এখন স্বাস্থ্যখাতে আমাদের দেড় লক্ষ লোক কাজ করছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে আমরা নতুন অর্গানোগ্রাম তৈরি করছি। সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের আরও দেড় লাখ লোকবল লাগবে।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলম। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ডা. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. বার্দান জাং রানা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলামসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এসবি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন