ঘুষের টাকার স্তূপ নিয়ে সার্ভেয়ার আটকের ঘটনায় দুদকের মামলা

প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২২, ০৮:৪৪ এএম

ঘুষের ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান আটকের ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (৩ জুলাই) দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং- ১।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুলাই সকাল ৯.৩৫ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দরের তল্লাশী গেইট থেকে প্রবেশের সময় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সার্ভেয়ার আতিকের কাছে টাকা পাওয়া যাওয়ার বিষয়টি মুঠোফোনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজকে জানান। তিনি (এডিসি) তাৎক্ষণিক আতিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু ততক্ষণে সার্ভেয়ার আতিক ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ায় তাকে আটকাতে পারেনি কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

পরে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয় তাকে। সেখানে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকার উৎস সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। পরে গোয়েন্দা সংস্থা সার্ভেয়ার আতিককে কক্সবাজার ফেরত এনে জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্ভেয়ার আতিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সেখানেও জিজ্ঞাসাবাদে সার্ভেয়ার আতিক টাকার উৎস সম্পর্কে সদুত্তর দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করে। পরে ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করে তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় আদালতের বিচারক তাকে ২ জুলাই কারাগারে প্রেরণ করে। সবশেষ দুদক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর সার্ভেয়ার আতিকের বিরুদ্ধে রোববার দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করে দুদক কক্সবাজার কার্যালয়।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সার্ভেয়ার আতিক উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে হস্তান্তর, স্থানান্তরের চেষ্টা করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে। এদিকে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মহেশখালীর গভীর সমুদ্রবন্দর ও বেজার অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের কমিশন বাণিজ্যে জড়িত থাকার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।

সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি মহেশখালী দ্বীপের অধিগ্রহণ করা কয়েকটি মেগাপ্রকল্পের জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায়িত্ব পেয়ে লাগামহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর দায়িত্ব ছিল মহেশখালীর ধলঘাটার গভীর সমুদ্রবন্দর এবং বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি-বেজার অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। এই দুই মেগাপ্রকল্পের প্রায় এক হাজার ৫০০ একর অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের টাকার চেক দিতে গিয়ে আতিকুর বিপুল অঙ্কের কমিশন বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। বিমানবন্দরে ধরা পড়ার পর গোয়েন্দাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুর তাঁর টাকার উৎস নিয়ে দুই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: