বাংলাদেশে ইসলামের নীরব বিপ্লব ঘটেছে: মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ২০ ২০২২, ০৫:১৮

বাংলাদেশে ইসলামের নীরব বিপ্লব ঘটে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মালেশিয়া প্রবাসী ইসলামি চিন্তাবিদ মিজানুর রহমান আজহারী। তার মতে, সাধারণ লোকদের ইসলামকে জেনে-বুঝে মানার চেষ্টা, আরবি ভাষা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ, ইসলামিক কন্টেন্টের সহজলভ্যতা, বাংলা ভাষায় আরব বিশ্বের স্কলারদের গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর সরল অনুবাদ, মৌলিক ইসলামি সাহিত্য রচনা, ইসলামি বইমেলাগুলোতে উপচে পড়া ভিড় মিলে দেশে ইসলামের বিপ্লব ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ ফেসবুক ওয়ালের এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে গণকমিশনের বহুল আলোচিত ১১৬ আলেমের একজন মিজানুর রহমান আজহারী। তালিকায় নিজের নাম প্রকাশের পর এই প্রথম মুখ খুলেছেন জনপ্রিয় এই ইসলামী বক্তা।

একুশে জার্নালের  পাঠকদের জন্য তার সেই স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো—

“ইসলাম হচ্ছে চলমান সমস্যা ও সংকটে বাস্তবসম্মত সমাধানের নাম। এ সমাধান আমরা জাতির সামনে যতো বেশি হাজির করতে পারবো, ততোই মানুষ ইসলামের প্রতি ঝুঁকবে এবং সেটা হচ্ছেও আলহামদুলিল্লাহ।

আমার দৃষ্টিতে ইতিমধ্যে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে ইসলামের নীরব বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। সাধারণ লোকদের ইসলামকে জেনে-বুঝে মানার চেষ্টা, আরবি ভাষা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ, ইসলামিক কন্টেন্টের সহজলভ্যতা, বাংলা ভাষায় আরব বিশ্বের স্কলারদের গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর সরল অনুবাদ, মৌলিক ইসলামি সাহিত্য রচনা, ইসলামি বইমেলাগুলোতে উপচেপড়া ভিড়, তাফসির মাহফিলগুলোতে বিপুল জনস্রোত, সুস্থধারার ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার টিভি শো ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো এবং হাল আমলের তরুণ-তরুণীদের ইসলামের প্রতি বিশেষ আকর্ষণবোধ ইত্যাদি সব একাকার হয়ে বাংলাদেশে একটি সফট ইসলামিক রেভোলুশন হয়ে গিয়েছে। আর এটাই সেকু সমাজের গাত্রদাহের প্রধান কারণ।

জঙ্গী, জিহাদী, দেশ বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী ইত্যাদি বলে যে ট্যাগিং কালচার চালু করা হয়েছে, এগুলো মানুষ আর আগের মতো গিলছে না। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে দ্বীন ও ধর্মকে আলাদা করার প্রজেক্ট ইতিমধ্যেই লস প্রজেক্ট বলে বিবেচিত হচ্ছে। জনসাধারণের মাঝে ইসলামকে সঠিকভাবে জানার এবং প্র্যাকটিস করার প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এখন আমাদের কাজ হলো ইসলামের প্রকৃত রূপ ও সৌন্দর্য মানুষের কাছে যৌক্তিকভাবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই প্রকল্পে মনোনিবেশ করা।

ইসলামি শারিয়ার প্রাণসত্তাকে জনপরিসরে যৌক্তিকভাবে হৃদয়ে ধারণ করাতে মানুষকে বোঝাতে হবে যে— ইসলামের পরিধি অনেক ব্যাপক। যেকোনো কিছুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে একোমোডেট করার ক্ষমতা ইসলামের আছে। ইসলামের বিধান সর্বসময় ও সর্বকালের উপযোগী, গতিশীল এবং দুনিয়ার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বহমান। মানুষকে আরো বোঝাতে হবে— জিহাদ হল মজলুমকে উদ্ধার করার মিশন। ইসলামি আইনগুলো তুলনামূলক বেশি মানবিক। ইসলামি লাইফস্টাইল মানেই স্মার্টনেস, সুস্বাস্থ্য, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি। শিক্ষা, উন্নয়ন, বিনোদনসহ কোন কিছুতেই ইসলাম বাধ সাধে না বরং ইসলাম সকল ক্ষতিকর, অকল্যাণকর বা হারাম বিষয়ের বিকল্প ব্যবস্থা হাজির করে। ইসলামের এই অল্টারনেটিভ ডাইমেনশনকে আমরা যতো জনপ্রিয় করে তুলতে পারবো ততোই সেটা ধীরে ধীরে মানুষের মনে শেকড় গেড়ে জায়গা করে নিবে।

পরিশেষে বলব, কিছু ইনফ্লুয়েনশিয়াল আলেমদের লিস্ট করে, তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে, মিথ্যা অভিযোগ তুলে কৌশলে জনগণকে ইসলাম থেকে দূরে সরানো যাবে না। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-র বাণী স্বমহিমায় সদা সমুজ্জ্বল থাকবে ইনশাআল্লাহ। কারণ, এ কালিমা নামক বৃক্ষের গোড়া মাটির গভীরে, আর শাখা-প্রশাখা আল্লাহর আরশে। এ বৃক্ষ উপড়ে ফেলা এতো সোজা না!”