বিজ্ঞাপন

পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত বান্দরবান

May 5, 2022 | 1:54 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বান্দরবান: ইদের ছুটিতে পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলো। শহ‌রের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউজগুলোতে প্রায় শুতভাগ বু‌কিং। ঘুরতে আসা পর্যটকদের কারণে দীর্ঘদিন পর প্রাণ ফি‌রে পেয়েছে বান্দরবান। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে যেমন মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা, তেমনি ব্যবসায়ীরাও দেখছেন আশার আলো।

বিজ্ঞাপন

বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, তমা তুঙ্গী, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, দেবতাকুম, নাফাকুম, রেমাক্রীসহ সব পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যটকের ভিড়। সকাল থেকে পর্যটকরা পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে চাঁদের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন একপাহাড় থেকে আরেক পাহাড়। কেউ ছুটে যাচ্ছেন ঝর্ণার পানিতে গা ভেজাতে, কেউ যাচ্ছেন পাহাড়ের চুড়ায় মেঘ ধরতে, আবার কেউবা যাচ্ছেন পাহাড়ি পল্লীগুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জীবন ধারা উপভোগ করতে। আর মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্যগুলো স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে কেউ কেউ প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে ক্যামেরাবন্দী করছেন। এককথায় নগর জীবনের ব্যস্ততা ভুলে পর্যটকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগে।

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ বিজয়, এটি তাজিংডং নামেই পরিচিত। একই সড়কে ১৫ কি.মি. গেলে দেখা যায় কিংবদন্তী বগালেক। এটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্পট। এছাড়াও পাহাড়ের সঙ্গে মেঘের মিতালী এবং লুকোচুরি খেলার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা।

বিজ্ঞাপন

প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য্য ও ১২টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আদি বৈচিত্যময় জীবনযাত্রা এবং সংস্কৃতির কারণে বান্দরবানে দিন দিন পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে সারা বছরই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে বান্দরবানে। ইদসহ সরকারী নানা ছুটির দিনগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় পড়ে যায়। এবারের ইদেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি এবং পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা জানান, জেলায় পর্যটকদের সেবায় রয়েছে শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউজ। এছাড়াও পর্যটক পরিবহনে রয়েছে ৪ শতাধিক চাঁদের গাড়ি। সব মিলিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জেলার ২০ হাজার মানুষ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

বিজ্ঞাপন

টুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হালিম জানান, এবারের ইদে টানা ছুটি থাকাতে বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। তাই পর্যটকরা যেন নিরাপদে ও ভালভাবে আনন্দ-ভ্রমণ করতে পারে সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরিজি জানান, জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন সকল পর্যটন স্পটগুলোতে নারী পুরুষ যেন স্বাভাবিকভাবে আনন্দপূর্ণ পরিবেশে ঘুরতে পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেঘলাতে মায়েদের জন্য মাতৃছায়া নামে একটি বেষ্টনী কর্ণার তৈরি করা হয়েছে, মেঘলা নীলাচলে পর্যটকদের নামাজের জন্য মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন যে সব পণ্য তৈরি করে সেগুলো যেন পর্যটকদের কাছে বিক্রি করতে পারে তার জন্য নীলাচলে ব্রান্ডিং বান্দরবান নামে একটি শপ তৈরি করা হয়েছে। বান্দরবানে যেহেতু একাধিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস এবং তাদের প্রধান জীবিকা হচ্ছে জুম চাষ, সে জুম চাষটিকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার জন্য নীলাচলের পাশে পাহাড়ে একটি জুম চাষ করা হয়েছে। সেখানে পর্যটকরা যেন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের জুম চাষের পদ্ধতি, জুমঘর, জুমের চাষাবাদ কিভাবে করতে হয়, জুমের ফসল কিভাবে তুলতে হয় সবকিছুই উপভোগ করতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসএ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন